চলমান সমাজ
-অমরেশ কুমার
রাতের শহর, চারিদিকে আলোর ঝলকানি, প্রতিদিন রাজ শহর রাজকন্যার বিবাহের আলোক সজ্জায় সেজে ওঠে নতুন নতুন রূপে। নীরু রাস্তা দিয়ে চুপিসারে হাঁটতে থাকে। ফুটপাথে চাদর গায়ে অগণিত মানুষ নিদ্রায় আছন্ন। কেউ বা একা, কেউ বা সন্তান বুকে নিয়ে। ঠিকানা আজ তাদের ফুটপাথ। কাল কোথায় থাকবে কেউ জানে না , তবে কোনো এক নতুন ফুটপাথ যে হবে তা নিশ্চয়। নীরু আরো এগিয়ে চলে… কোথাও যে এর শেষ নেই। শান্ত আলোক ধাঁধানো রাজ শহরের এ কি রূপ ! দিনের কোলাহলে বিশাল বিশাল অট্টালিকার বাবুদের দেখা নেই । সমাজ তো বিভাজিত দিনে- রাতে, নীরুর এ এক নিদারুণ বাস্তব উপলদ্ধি।
নীরু বাড়ি ফেরে ভোরের রাতে। সারাদিন কখনো কখনো দূরপাল্লার journey করে সারারাতও তার কাজের চাপেই কেটে যায় বিশ্রামের অবকাশ নেই। salesman এর কাজ; তাই চলমান সমাজের সাথে তার ক্রমাগত মানিয়ে নিতে হয়। হাজার হাজার মানুষের সমাগম, সবাই সবার জন্য ব্যস্ত ।
বাড়ি ফিরেই আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নীরু জিজ্ঞাসা করে কি নিয়ে ফিরলি নীরু ….?
প্রতিবিম্ব: বাস্তব উপলব্ধি।
নীরু আবেগ পূর্ণ হয়ে ভাবতে থাকে সারাদিনের কথা ….
প্রতিবিম্ব সেগুলি বলতে থাকে ,
“চলমান সমাজে চলতে গিয়ে
কখনো ভীড়ের চাপে হাঁটতে হয়,
কখনো বা, স্থির চোখে স্থির ভাবে তাকিয়ে
সমাজের গতি মাপতে হয়;
যেন, স্থির অবস্থায় অনুভব করতে হয়
হাঁটছি দেখো হাঁটছি আমি,
হাঁটছে দেহখানি–
বাস্তবতার পাথর ভেঙে
সমাজ চিনলে কতখানি ।
ঢেউ এর সমান তরঙ্গের ন্যায় মানুষগুলো ঘোরে
স্বপ্নগুলো মনের মাঝে,স্তরে স্তরে জমে;
কেউ বা ধাক্কা মারে বাহির হতে
কেউ বা, স্বপ্ন মাঝে স্তরের ফাঁকে
চিরতরে ঘুমিয়ে পড়ে।”